শেখ আজমল হুদা, ভালুকা প্রতিদিন:
ভালুকায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ যোগদান করার পর থেকেই জনকল্যাণমূলক কাজ করে যাচ্ছেন।
মোহাম্মদ আলী নামে এক ব্যক্তি বলেন, আগে স্যারের সাথে দেখা করতে আসলে খাড়াইয়া (দাঁড়িয়ে) থাকতাম, আমরা বুড়া মানুষ বওনের (বসার) লাগাইয়া চেয়ার দিছে।
সৈয়দ হাসান বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের জন্য অপেক্ষা করলে অনেক খারাগ লাগতো, এখন দরজার সামনে বই সংরক্ষন করে রেখেছেন তাই বই পড়ে সময় কেটে যায়।

এস এম তুষার বলেন, “ভালুকা উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গড়ে ওঠা বই পড়ার এই সুযোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। সকালে এসে বইয়ের পাতায় হারিয়ে গেলাম জ্ঞান অর্জনের জন্য।
শ্রীমতি পূর্ণিমা রানী বলেন, ভালুকা বাসষ্ট্যান্ড থেকে সাব রেজিষ্ট্রী অফিস ও হাসপাতাল পর্যন্ত যেতে সময় লাগতো প্রায় আধা ঘন্টা, এখন পাঁচ মিনিটের মধ্যেই যেতে পারি ফুটপাতের দোকান না থাকার কারণে।
ভালুকা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (Uno Bhaluka) এর ফেইজবুক থেকে:-
সম্মানিত ভালুকাবাসী, আসসালামু আলাইকুম। আপনাদের সকলের জ্ঞাতার্থে কিছু বিষয় শেয়ার করছি, এ থেকে আমি আপনাদের সহযোগীতা আরও সম্প্রসারিতভাবে পাবো বলে বিশ্বাস করছি।

আমার খুব স্বপ্ন যে কিছু দিন ভালুকায় আছি, সকলের সহযোগীতায় একটি সুন্দর, পরিচ্ছন্ন, মাদকমুক্ত, দূষণ মুক্ত ভালুকা গড়ার জন্য দিনরাত কাজ করবো। সে লক্ষ্যে উপজেলা প্রশাসনের সুনির্দিষ্ট কিছু প্ল্যান আছে। তার প্রথম ধাপ হিসেবে ভালুকা বাসস্ট্যান্ড, বাজার, ভরাডোবা বাজার, সীডস্টোর, মাস্টারবাড়ি বাজারসহ হাইওয়ে সংলগ্ন জায়গাগুলোতে একটা পরিবর্তন প্রথমেই আনতে পারলে ম্যাসেজটা সকলেই সহজেই পেতো। সে লক্ষ্যে কাজ শুরু করার পরে শুধু ভালুকা বাসস্ট্যান্ড ঠিক করতেই আমার দীর্ঘ সময় লেগে যাচ্ছে। এবং সেটা আমাদের মধ্যেই কিছু কিছু মানুষের অসহযোগিতার জন্য হচ্ছে। কিন্তু কেউ যদি মনে করে আমরা হতোদ্যম হবো, সেটা হবে দিবাস্বপ্ন! আমরা ক্রমাগত চেষ্টা করেই যাবো। কেন সময় লাগছে তার একটা ব্যাখ্যা দিই।
আমরা গত ২ মাস আগে যাদের উচ্ছেদ করেছি, তাদের প্রতেকের জন্য আমাদের সুন্দর পরিকল্পনা আছে। যেমন ফলের মার্কেট করে দিয়েছি, সবাই ওখানে বসলে একজন ক্রেতাও তো বাইরে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। কিন্তু তারা সেটা না করে মার্কেটকে গুদাম বানিয়ে বাইরে দোকান করছে, কেউ কেউ প্রভাব বিস্তারের অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। ৫ বার আমাকে উচ্ছেদ করতে হয়েছে। এখন এরাই আবার বাইরে থেকে লোক এনে নতুন দোকান বসানোর পায়তারা করছে। এদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত যা নেবার আমরা নিয়ে নিয়েছি, শুধু ইমপ্লিমেন্ট করবো। সময় কথা বলবে। দ্বিতীয়ত চায়ের দোকান ছিলো আমাদের ২৭ টি, তারা প্রত্যেকেই একই ধরণের চা বিক্রি করে, কোন ভ্যারিয়েশন নেই, সব শ্রেণির ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে পারে না। আর মাথার উপরে নোংরা, ছেড়া পলিথিন, বিচ্ছিরি পরিবেশ। ওরা তো কষ্ট করেই, ক্রেতারাও সন্তুষ্ট হবার কোন কারণ নেই।

আমাদের ইচ্ছা ছিলো যেখানে বসালে জ্যাম হবে না, তেমন ভিন্ন ভিন্ন ৭/৮ টি স্পটে তাদের জন্য অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন কিছু টি স্টল (অনেকটা ফুড পার্কেই মতো করে দিব) যার ছবি এবং প্রতিটি দোকানের নাম আমার পরবর্তী পোস্টে আমি দেবো। কিন্তু যখনই স্পটগুলো বাছাই করতে গেলাম পেছনের গুটিকয়েকজন দোকানদার বাধ সাধলেন। বললেন এতে তাদের ব্যবসার ক্ষতি হবে কিন্তু বাস্তবতা হলো আগে এই জায়গাগুলোতে দোকান পাট ছিলো এবং এখনোও আবার তারা করতে দিয়েছে যার বেশির ভাগই টাকার বিনিময়ে। প্রতিদিন শেষে তাদের টাকা দিতে হয় এবং সেটা ৫০ থেকে ২০০ পর্যন্ত! পৌরসভা বা উপজেলা প্রশাসন বসালে এই ইনকামটা বন্ধ হয়ে যেতো। আমি বিনা খরচে তাদেরকে ভালো একটা ব্যবস্থা করে দিতে চেয়েছিলাম, তখন অল্প কিছু লোক আবদার করে বসে এতে তাদের ব্যবসার ক্ষতি হবে বলে। আমিও জোর করি নি, কারণ আমি জানতাম তারা দোকান বসাবেই এবং হয়েছেও তাই। যারা আপত্তি বেশি করেছে তাদের দোকানের সামনে ২/৩ টি করে চায়ের দোকান এখন। যা হোক এটা নিয়েও প্ল্যান আছে, সময় হলে সবাই দেখবেন সেটা।
একবার ভেবে দেখুন বাসস্ট্যান্ড- রাস্তাঘাট- বাজার- উন্নয়ন কর্মকান্ড- পরিবেশ- লিটার- ফিশারি- স্কুল কলেজ- মাদক- শিক্ষা ব্যবস্থা- চিকিৎসাসহ সব মিলে কতগুলো কাজ আমাদেরকে করতে হবে! তার মধ্যে আমাকে যদি বাসস্ট্যান্ডেই এতটা সময় দিতে হয় আমি বাকি কাজগুলো কখন করবো? অনেক বোঝানো হয়েছে, বল প্রয়োগও করা হয়েছে (যদিও যথেষ্ট না); এরপর আর কোথাও নমনীয়ভাবে কাউকে বোঝানো হবে না। আইন মানতে বাধ্য করা হবে। যেহেতু কেউ কর্মহীন হচ্ছেন না, তাই এ নিয়ে কোন আপোষ নয়। ধন্যবাদ।